কিশোরগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে অনিয়ম আর দালালচক্রের দৌরাত্ম্য। পাসপোর্ট সেবার নামে চলছে ঘুষ, প্রতারণা ও দালালি—যার ভুক্তভোগী সাধারণ নাগরিকরা।সকালে পাসপোর্ট নিতে আসা এক নাগরিক নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে জানান, “রোদের মধ্যে শত শত মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকে। অথচ ভিতরে দালালদের লাইনে কোনো ভোগান্তি নেই—ওরা ২০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত ঘুষ নিয়ে সোজা ভিতরে ঢুকে কাজ করিয়ে নিচ্ছে।”প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসব দালালের বয়স ২০ থেকে ২৫-এর মধ্যে এবং তারা বেশিরভাগই চেহারায় অপরাধীর মতো দেখায় ও মাদকাসক্ত। অভিযোগ রয়েছে, পাসপোর্ট অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যরাও এই দালালদের থেকে সরাসরি টাকা নিয়ে সিরিয়ালের নিয়ম ভেঙে তাদের কাজ করে দিচ্ছেন। এমনকি কিছু পুলিশ সদস্যের সামনেই ঘুষ লেনদেন চললেও তারা নিশ্চুপ থাকেন।এছাড়া, অফিসের আশপাশের দোকানগুলোকেও দালালি কার্যক্রমে জড়িত দেখা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব দোকানদার ভিন্ন জেলা বা থানার নতুন আগতদের ভুল তথ্য দিয়ে ভয় দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে থাকেন। অনেক সময় টাকা নিয়ে কোনো কাজ না করেই উধাও হয়ে যায় দালালরা।স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, এই অনিয়মের পেছনে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় কিছু নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয় রয়েছে। তারা মাসিক চাঁদা নিয়ে এসব দেখেও দেখেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।দালালদের প্রভাব এতটাই যে, পাসপোর্ট অফিসের বাইরে সরকারি নির্দেশনামূলক কোনো কার্যক্রম কার্যকর হয় না। সাধারণ নাগরিকদের প্রশ্ন—"এই দেশে কি সৎভাবে নিজের অধিকার নিয়ে সরকারি সেবা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই?"সচেতন মহল বলছে, পাসপোর্ট অফিসের এই অনিয়ম দূর করতে হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। না হলে দেশের লাখো মানুষের কষ্টের মধ্যেই সেবা পাওয়ার আশা দিন দিন ক্ষীণ হয়ে যাবে।