জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি শেখ মজিবুর রহমান ইকবালকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৫টার দিকে উপজেলা শহরের ডাকবাংলো মাঠে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের হাজারো নেতাকর্মী যোগ দেন।সমাবেশের সভাপতির বক্তব্যে মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের কথা তুলে ধরে বলেন:দলের দুর্দিনে আমি বাজিতপুর-নিকলী দুই উপজেলাতেই নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। দলের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাঠে থেকেছি। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মামলা মোকাবেলা করেছি। আমিও একাধিকবার হামলা ও মামলার শিকার হয়েছি।মনোনয়ন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি হাইকমান্ডের প্রতি সরাসরি বার্তা দেন:জোটের অজুহাতে আমাকে বাদ দিলে সেটা আমার প্রতি অবিচার হবে। কারণ আসনটি বিএনপির, এলাকাটি বিএনপির ঘাঁটি, সুষ্ঠু প্রতিটি নির্বাচনে এখান থেকে বিএনপি প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। বিএনপির দলীয় প্রার্থীর বদলে জোটের কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে বিএনপি এ আসন হারাবে।মিছিল ও সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতাকর্মীরা ‘ইকবাল ভাই যোগ্য লোক, মনোনয়ন তারই হোক’, ‘দুর্দিনে ইকবাল ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই’ স্লোগান দেন।বক্তারা শেখ মুজিবুর রহমান ইকবালের পক্ষে জোরালো দাবি জানিয়ে বলেন, তিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলটির প্রার্থী ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে এ আসনে বিএনপির সাংগঠনিক হাল ধরে রেখেছেন। বক্তারা উল্লেখ করেন:কিশোরগঞ্জ-৫ আসনটি জেলার মধ্যে বিএনপির 'সবচেয়ে উর্বর আসন' এবং 'দুর্গ' হিসেবে পরিচিত।গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বাজিতপুর-নিকলী এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলেন ইকবাল।বক্তারা আরও দাবি করেন, এই আসনের জনগণ শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল ছাড়া অন্য কাউকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেনে নেবে না।তাই অবিলম্বে প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণা করার জন্য দলীয় হাইকমান্ডের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজকের এই বিশাল শোডাউন ও সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়া, বাজিতপুর উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোস্তফা আমিনুল হক, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মামনুন রহমান পুটনসহ যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ।এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাজিতপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ মাখন, অধ্যাপক ইন্দ্রজিৎ দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফজল হোসেন, নিকলী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মানিক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক হেলিম তালুকদার সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।উল্লেখ্য, কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়ন ঘোষণা করা হলেও কিশোরগঞ্জ-১ ও কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। এই দুটি আসন বিএনপির মিত্র দলের জন্য বরাদ্দ রাখার জল্পনা থাকলেও, কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে শেখ মজিবুর রহমান ইকবাল ধারাবাহিক কর্মসূচি—যেমন ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন, মশাল মিছিল ও রেলপথ অবরোধ—পালন করে মনোনয়ন নিশ্চিত করার দাবিতে চাপ সৃষ্টি করে চলেছেন।