
কিশোরগঞ্জ শহর যেন রীতিমতো অটোরিকশার দখলে! অনুমোদনহীন ও বেপরোয়া এসব যানবাহনের কারণে প্রতিদিনই তীব্র যানজটে ভুগছে শহরবাসী। সকাল-সন্ধ্যা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার অটোরিকশা, নিয়মের তোয়াক্কা না করে শহর জুড়ে অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে কিশোরগঞ্জে যানজট এখন এক বিভীষিকার নাম। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই।
বিশেষ করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো যেন স্থবির হয়ে পড়ে। একরামপুর, গৌরাঙ্গবাজার, কালী বাড়ী, স্টেশন রোড, বড়বাজার—সবখানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকে মানুষ।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার তথ্য মতে, মাত্র ৬০০টি অটোরিকশা পৌরসভার অনুমোদন পেলেও বাস্তবে প্রায় ১০ হাজারের বেশি অটোরিকশা শহরে চলাচল করছে। হাওরের পানি আসার কারণে আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার চালকরা এখন শহরে এসে অটোরিকশা চালাচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ যেন এখানে রীতিমতো অনুপস্থিত। অটোরিকশা চালকরা নিয়ম মানছেন না, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সামনেই যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে। এমনকি ফুটপাত পর্যন্ত দখল করে চলছে যান চলাচল। এতে সাধারণ পথচারীদেরও চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই।
শুধু সড়কই নয়, শহরের ভবন নির্মাণেও চলছে লাগামহীন অনিয়ম। পৌরসভা থেকে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না রেখে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ফলে রাস্তায় এবং ফুটপাতে বেড়েই চলেছে অবৈধ পার্কিং। এতে শহরের যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
যদিও প্রশাসন বলছে, যানজট কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে তার খুব বেশি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। পৌরসভা, ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই সমস্যা জটিল হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ নাগরিকদের।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ট্রাফিক বিভাগ একযোগে আশ্বস্ত করেছেন যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়েছে, ভবন নির্মাণে অনিয়ম রোধে শিগগিরই অভিযান চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এত কিছু সত্ত্বেও কবে নাগাদ কিশোরগঞ্জ শহর যানজটমুক্ত হবে? কিংবা হবে তো আদৌ? আপাতত, শহরের প্রতিটি মোড়ে আটকে থাকা মানুষগুলোর চোখে সেই প্রতিশ্রুত "স্বস্তির শহর" এখনও অনেক দূরের পথ।
বিষয় : কিশোরগঞ্জ
বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৬ জুন ২০২৫
কিশোরগঞ্জ শহর যেন রীতিমতো অটোরিকশার দখলে! অনুমোদনহীন ও বেপরোয়া এসব যানবাহনের কারণে প্রতিদিনই তীব্র যানজটে ভুগছে শহরবাসী। সকাল-সন্ধ্যা সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা হাজার হাজার অটোরিকশা, নিয়মের তোয়াক্কা না করে শহর জুড়ে অবাধ চলাচল—সব মিলিয়ে কিশোরগঞ্জে যানজট এখন এক বিভীষিকার নাম। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রোগী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী পর্যন্ত সবাই।
বিশেষ করে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা ও বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো যেন স্থবির হয়ে পড়ে। একরামপুর, গৌরাঙ্গবাজার, কালী বাড়ী, স্টেশন রোড, বড়বাজার—সবখানেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকে মানুষ।
কিশোরগঞ্জ পৌরসভার তথ্য মতে, মাত্র ৬০০টি অটোরিকশা পৌরসভার অনুমোদন পেলেও বাস্তবে প্রায় ১০ হাজারের বেশি অটোরিকশা শহরে চলাচল করছে। হাওরের পানি আসার কারণে আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার চালকরা এখন শহরে এসে অটোরিকশা চালাচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
ট্রাফিক আইনের প্রয়োগ যেন এখানে রীতিমতো অনুপস্থিত। অটোরিকশা চালকরা নিয়ম মানছেন না, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সামনেই যত্রতত্র যাত্রী ওঠানো-নামানো হচ্ছে। এমনকি ফুটপাত পর্যন্ত দখল করে চলছে যান চলাচল। এতে সাধারণ পথচারীদেরও চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই।
শুধু সড়কই নয়, শহরের ভবন নির্মাণেও চলছে লাগামহীন অনিয়ম। পৌরসভা থেকে অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না রেখে গড়ে তোলা হয়েছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ফলে রাস্তায় এবং ফুটপাতে বেড়েই চলেছে অবৈধ পার্কিং। এতে শহরের যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
যদিও প্রশাসন বলছে, যানজট কমাতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, বাস্তবে তার খুব বেশি প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না। পৌরসভা, ট্রাফিক বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবেই সমস্যা জটিল হয়ে উঠছে বলে অভিযোগ নাগরিকদের।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ট্রাফিক বিভাগ একযোগে আশ্বস্ত করেছেন যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথা বলা হয়েছে, ভবন নির্মাণে অনিয়ম রোধে শিগগিরই অভিযান চালানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়—এত কিছু সত্ত্বেও কবে নাগাদ কিশোরগঞ্জ শহর যানজটমুক্ত হবে? কিংবা হবে তো আদৌ? আপাতত, শহরের প্রতিটি মোড়ে আটকে থাকা মানুষগুলোর চোখে সেই প্রতিশ্রুত "স্বস্তির শহর" এখনও অনেক দূরের পথ।
আপনার মতামত লিখুন