
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী হাওর এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। বর্ষা এলেই ঢেউয়ের তালে তালে নেচে ওঠে এই হাওর জনপদ। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিকলীর প্রাকৃতিক রূপ আর মনোমুগ্ধকর জলরাশি দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসুদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।
নিকলী হাওরের জলসীমা শুধুমাত্র নিকলীতেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি বিস্তৃত হয়ে গেছে মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনার ভেতরেও। বর্ষাকালে যখন হাওরের বুকজুড়ে পানি থইথই করে, তখন এই হাওর হয়ে ওঠে এক বিশাল জলভূমি—যা পর্যটকদের জন্য এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। ঢাকার সঙ্গে সহজ সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং সদ্য নির্মিত অলওয়েদার রোডের কল্যাণে এই অঞ্চলে পর্যটকদের আগমন আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়েছে।
এবারের বর্ষায় হাওরের ঢেউ, আকাশ-জলের মিলন আর দিগন্তজোড়া নীল জলরাশি নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে নিকলীতে। হাওরের মাঝ দিয়ে ছুটে চলা স্পিডবোট, ট্রলার আর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে যাচ্ছেন হাসানপুর সেতু, বালিখোলা, নিকলী বেড়িবাঁধ কিংবা অষ্টগ্রামের কুতুবশাহী মসজিদ—সবার চোখে-মুখে শুধু মুগ্ধতা।
নিকলী বেড়িবাঁধ পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ২০০০ সালে নির্মিত এই বাঁধ ও এর আশপাশের এলাকা এখন পর্যটনের কেন্দ্রস্থল। বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে সামনে তাকালেই যেন দেখা মেলে এক বিশাল সমুদ্রের—কোথাও কোনো গ্রাম নেই, শুধু জল আর আকাশের খেলা।
পর্যটন বৃদ্ধির এই সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে স্থানীয় প্রশাসন হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। তবে এখনো পর্যাপ্ত মানসম্মত আবাসন, নিরাপত্তা ও স্যানিটেশন সুবিধার ঘাটতি আছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভ্রমণকারী। তাঁদের দাবি, সরকার যদি যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, তাহলে কিশোরগঞ্জের এই হাওর হতে পারে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র।
মিঠামইনের দিল্লীর আখড়া, ইটনার শাহী মসজিদ, জয়সিদ্ধির র্যাংলার আনন্দমোহন বসুর বাড়ি কিংবা তাড়াইলের হিজলজানি হাওর—প্রতিটি স্থানেই আছে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর সৌন্দর্যের সমন্বয়। শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল ঘিরে আছে অসংখ্য ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, যা পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
পরিশেষে বলা যায়, নিকলীর হাওর এখন আর শুধু কিশোরগঞ্জের গর্ব নয়, এটি হয়ে উঠছে বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বীপ। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও বেসরকারি উদ্যোগ একান্ত প্রয়োজন।
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৭ জুন ২০২৫
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অন্যতম নিদর্শন কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী হাওর এখন পর্যটকদের পদচারণায় মুখর। বর্ষা এলেই ঢেউয়ের তালে তালে নেচে ওঠে এই হাওর জনপদ। রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ১১০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত নিকলীর প্রাকৃতিক রূপ আর মনোমুগ্ধকর জলরাশি দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসা ভ্রমণপিপাসুদের হৃদয় জয় করে নিয়েছে।
নিকলী হাওরের জলসীমা শুধুমাত্র নিকলীতেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি বিস্তৃত হয়ে গেছে মিঠামইন, অষ্টগ্রাম ও ইটনার ভেতরেও। বর্ষাকালে যখন হাওরের বুকজুড়ে পানি থইথই করে, তখন এই হাওর হয়ে ওঠে এক বিশাল জলভূমি—যা পর্যটকদের জন্য এক দুর্দান্ত অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে। ঢাকার সঙ্গে সহজ সড়ক ও রেল যোগাযোগ এবং সদ্য নির্মিত অলওয়েদার রোডের কল্যাণে এই অঞ্চলে পর্যটকদের আগমন আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়েছে।
এবারের বর্ষায় হাওরের ঢেউ, আকাশ-জলের মিলন আর দিগন্তজোড়া নীল জলরাশি নতুন করে প্রাণ ফিরিয়ে দিয়েছে নিকলীতে। হাওরের মাঝ দিয়ে ছুটে চলা স্পিডবোট, ট্রলার আর ইঞ্জিনচালিত নৌকায় চড়ে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে যাচ্ছেন হাসানপুর সেতু, বালিখোলা, নিকলী বেড়িবাঁধ কিংবা অষ্টগ্রামের কুতুবশাহী মসজিদ—সবার চোখে-মুখে শুধু মুগ্ধতা।
নিকলী বেড়িবাঁধ পর্যটকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। ২০০০ সালে নির্মিত এই বাঁধ ও এর আশপাশের এলাকা এখন পর্যটনের কেন্দ্রস্থল। বেড়িবাঁধে দাঁড়িয়ে সামনে তাকালেই যেন দেখা মেলে এক বিশাল সমুদ্রের—কোথাও কোনো গ্রাম নেই, শুধু জল আর আকাশের খেলা।
পর্যটন বৃদ্ধির এই সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে স্থানীয় প্রশাসন হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও বিভিন্ন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে। তবে এখনো পর্যাপ্ত মানসম্মত আবাসন, নিরাপত্তা ও স্যানিটেশন সুবিধার ঘাটতি আছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভ্রমণকারী। তাঁদের দাবি, সরকার যদি যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, তাহলে কিশোরগঞ্জের এই হাওর হতে পারে দেশের অন্যতম আকর্ষণীয় আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্র।
মিঠামইনের দিল্লীর আখড়া, ইটনার শাহী মসজিদ, জয়সিদ্ধির র্যাংলার আনন্দমোহন বসুর বাড়ি কিংবা তাড়াইলের হিজলজানি হাওর—প্রতিটি স্থানেই আছে ইতিহাস, সংস্কৃতি আর সৌন্দর্যের সমন্বয়। শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়, কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চল ঘিরে আছে অসংখ্য ঐতিহাসিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান, যা পর্যটন সম্ভাবনাকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে।
পরিশেষে বলা যায়, নিকলীর হাওর এখন আর শুধু কিশোরগঞ্জের গর্ব নয়, এটি হয়ে উঠছে বাংলাদেশের পর্যটন মানচিত্রে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বীপ। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপ ও বেসরকারি উদ্যোগ একান্ত প্রয়োজন।
আপনার মতামত লিখুন