
আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে হঠাৎ করেই চাপে পড়েছে মার্কিন ডলার। ইউরোর বিপরীতে ডলারের দর নেমে গেছে প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। মূলত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে সংশয় এবং মুদ্রানীতিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা এই পতনের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। এই পরিকল্পনার খবরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও动摇 হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতের সুদের হার নির্ধারণে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
মোনেক্স ইউরোপের গবেষক নিক রিস একে ‘নীতিগত বিপর্যয়’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, “এটি শুধুমাত্র ফেডের উপর রাজনৈতিক চাপ নয়, বরং মার্কিন অর্থনৈতিক নীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনাকেও ঘোলাটে করে তুলছে।”
বর্তমানে বাজারে ধারণা জন্মেছে যে, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী জুলাইতেই সুদের হার কমাতে পারে। যেখানে এক সপ্তাহ আগে সেই সম্ভাবনা ছিল মাত্র ১২ শতাংশ, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে। বছরের শেষ নাগাদ সুদের হার ৬৪ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমে আসতে পারে—এমন পূর্বাভাসই এখন বাজারে আলোচিত।
ডলারের পতনের সুযোগে অন্যান্য মুদ্রাগুলো শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে।
ইউরো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৭২৯ ডলার, যা ২০২১ সালের পর সর্বোচ্চ।
পাউন্ড বেড়ে ১.৩৭৫৩ ডলার হয়েছে, যা অক্টোবর ২০২১-এর পর সর্বোচ্চ।
সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে ডলার নেমেছে ০.৭৯৮৩ ডলারে, এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
জাপানি ইয়েন-ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, বিশেষত ব্যাংক অফ জাপানের সুদ নীতির ফলে।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানুয়ারিতে স্বল্পমেয়াদি সুদের হার বাড়িয়ে ০.৫ শতাংশ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ধীর গতির কড়াকড়িও ইয়েনের শক্তি ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট।
ফেডের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব, ট্রাম্প-পাওয়েল দ্বন্দ্ব, বৈশ্বিক শুল্ক চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা সব মিলিয়ে মার্কিন ডলার এখন বড় ধরনের চাপের মুখে। এরই মাঝে ইউরো, পাউন্ড, ফ্রাঙ্ক ও ইয়েনের মতো মুদ্রাগুলো ফিরে পাচ্ছে পুরনো জৌলুস।
বিশ্বমুদ্রার রাজনীতিতে এই নাটকীয় পরিবর্তন শুধু বিনিয়োগ নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, রপ্তানি-আমদানি ও মূল্যস্ফীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, যা বিশেষভাবে নজরে রাখার মতো একটি অর্থনৈতিক সংকেত।
বিষয় : আন্তর্জাতিক
রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৭ জুন ২০২৫
আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে হঠাৎ করেই চাপে পড়েছে মার্কিন ডলার। ইউরোর বিপরীতে ডলারের দর নেমে গেছে প্রায় চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। মূলত মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা নিয়ে সংশয় এবং মুদ্রানীতিতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা এই পতনের মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডোনাল্ড ট্রাম্প চলতি বছরের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে সরিয়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। এই পরিকল্পনার খবরে বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও动摇 হয়ে পড়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতের সুদের হার নির্ধারণে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।
মোনেক্স ইউরোপের গবেষক নিক রিস একে ‘নীতিগত বিপর্যয়’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, “এটি শুধুমাত্র ফেডের উপর রাজনৈতিক চাপ নয়, বরং মার্কিন অর্থনৈতিক নীতির ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনাকেও ঘোলাটে করে তুলছে।”
বর্তমানে বাজারে ধারণা জন্মেছে যে, ফেডারেল রিজার্ভ আগামী জুলাইতেই সুদের হার কমাতে পারে। যেখানে এক সপ্তাহ আগে সেই সম্ভাবনা ছিল মাত্র ১২ শতাংশ, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ শতাংশে। বছরের শেষ নাগাদ সুদের হার ৬৪ বেসিস পয়েন্ট পর্যন্ত কমে আসতে পারে—এমন পূর্বাভাসই এখন বাজারে আলোচিত।
ডলারের পতনের সুযোগে অন্যান্য মুদ্রাগুলো শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে।
ইউরো বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.১৭২৯ ডলার, যা ২০২১ সালের পর সর্বোচ্চ।
পাউন্ড বেড়ে ১.৩৭৫৩ ডলার হয়েছে, যা অক্টোবর ২০২১-এর পর সর্বোচ্চ।
সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে ডলার নেমেছে ০.৭৯৮৩ ডলারে, এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
জাপানি ইয়েন-ও নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, বিশেষত ব্যাংক অফ জাপানের সুদ নীতির ফলে।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানুয়ারিতে স্বল্পমেয়াদি সুদের হার বাড়িয়ে ০.৫ শতাংশ করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন ধীর গতির কড়াকড়িও ইয়েনের শক্তি ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট।
ফেডের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব, ট্রাম্প-পাওয়েল দ্বন্দ্ব, বৈশ্বিক শুল্ক চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়া, এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা সব মিলিয়ে মার্কিন ডলার এখন বড় ধরনের চাপের মুখে। এরই মাঝে ইউরো, পাউন্ড, ফ্রাঙ্ক ও ইয়েনের মতো মুদ্রাগুলো ফিরে পাচ্ছে পুরনো জৌলুস।
বিশ্বমুদ্রার রাজনীতিতে এই নাটকীয় পরিবর্তন শুধু বিনিয়োগ নয়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, রপ্তানি-আমদানি ও মূল্যস্ফীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, যা বিশেষভাবে নজরে রাখার মতো একটি অর্থনৈতিক সংকেত।
আপনার মতামত লিখুন