
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার গাজিরচর ইউনিয়নে মাদকবিরোধী জনসচেতনতামূলক আন্দোলন রীতিমতো গণপ্রতিরোধের রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি পরপর তিন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ একাধিক বিক্ষোভ, প্রতিবাদ এবং উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়—যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
১০ জুন (মঙ্গলবার) সাদিরচর এলাকায় অন্নাছি (৩৫) নামে এক নারী মাদককারবারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় জনতা। দীর্ঘদিন ধরে অন্নাছি মাদক বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সম্প্রতি তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কিছু ভিডিও, ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সামনে এলে এলাকাবাসী আর চুপ করে থাকেননি।
শতাধিক মানুষ মিছিল করে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন পিয়েল বলেন,
“এই মহিলা এলাকার যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বিক্ষোভে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃত্বও একমত পোষণ করেন। গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,
“জনগণের ঐক্য এবার প্রশাসনকেও নাড়া দেবে।”
২৪ জুন (মঙ্গলবার) মির্জাপুর গ্রামে মাদক ব্যবসায়ী মনিরের বাড়িতে স্থানীয় জনতা সরাসরি অভিযান চালায়। ইয়াবা ও গাঁজার কারবারে অভিযুক্ত মনিরের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমা হচ্ছিল। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় উত্তেজিত জনগণ একত্র হয়ে মনিরের বাড়ির সামনে স্লোগান দিতে থাকে। পরিবারের সদস্যদের উসকানিমূলক আচরণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, জনতা বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়।
এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না এলেও, এলাকাবাসী কড়া বার্তা দিয়েছেন—
“অপরাধীদের রক্ষা করলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া হবে।”
সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটে ২৭ জুন (শুক্রবার)। জুমার নামাজের পর সাদিরচর এলাকায় শতাধিক মুসল্লি শান্তিপূর্ণ মিছিল করে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী রুবেলের বাড়ির সামনে উপস্থিত হন এবং তাকে মাদক ছাড়ার আহ্বান জানান।
রুবেল নিজেই জনসম্মুখে ঘোষণা দেন—
“আজকের পর থেকে আর কখনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকব না। আমি সুস্থ পথে ফিরে আসতে চাই।”
এই ঘোষণার পর এলাকাবাসী তাকে সাধুবাদ জানায় ও উৎসাহ দেয়।
গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া এই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,
“এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলন।”
এই তিনটি ঘটনার প্রেক্ষিতে স্পষ্ট যে গাজিরচর ইউনিয়নে জনগণের মাদকবিরোধী চেতনা এখন জাগ্রত। তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে প্রবীণ, সবাই এক কণ্ঠে বলছেন—
“সাদিরচর মাদকমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।”
এলাকাবাসীর এমন ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি সামাজিক বিপ্লবের সূচনা, যেখানে মানুষ নিজেরাই নেতৃত্ব নিচ্ছে নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার।
বাজিতপুর নিউজ মতামত সেল
আপনার মতামত দিন: আপনি কি মনে করেন—এভাবেই জনতার উদ্যোগে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল সম্ভব?
মতামত দিন: bajitpurnews.com/muktimat
বিষয় : বাজিতপুর গাজিরচর মির্জাপুর মাদক মাদক ব্যবসায়ী
শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ২৮ জুন ২০২৫
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার গাজিরচর ইউনিয়নে মাদকবিরোধী জনসচেতনতামূলক আন্দোলন রীতিমতো গণপ্রতিরোধের রূপ নিয়েছে। সম্প্রতি পরপর তিন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণ একাধিক বিক্ষোভ, প্রতিবাদ এবং উচ্ছেদ অভিযানে অংশ নেয়—যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
১০ জুন (মঙ্গলবার) সাদিরচর এলাকায় অন্নাছি (৩৫) নামে এক নারী মাদককারবারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে স্থানীয় জনতা। দীর্ঘদিন ধরে অন্নাছি মাদক বিক্রি করে আসছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। সম্প্রতি তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কিছু ভিডিও, ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য এবং প্রমাণ সামনে এলে এলাকাবাসী আর চুপ করে থাকেননি।
শতাধিক মানুষ মিছিল করে তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন পিয়েল বলেন,
“এই মহিলা এলাকার যুবসমাজকে ধ্বংস করছে। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
বিক্ষোভে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃত্বও একমত পোষণ করেন। গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,
“জনগণের ঐক্য এবার প্রশাসনকেও নাড়া দেবে।”
২৪ জুন (মঙ্গলবার) মির্জাপুর গ্রামে মাদক ব্যবসায়ী মনিরের বাড়িতে স্থানীয় জনতা সরাসরি অভিযান চালায়। ইয়াবা ও গাঁজার কারবারে অভিযুক্ত মনিরের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ জমা হচ্ছিল। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় উত্তেজিত জনগণ একত্র হয়ে মনিরের বাড়ির সামনে স্লোগান দিতে থাকে। পরিবারের সদস্যদের উসকানিমূলক আচরণে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, জনতা বাড়িঘরে ভাঙচুর চালায়।
এই ঘটনায় এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য না এলেও, এলাকাবাসী কড়া বার্তা দিয়েছেন—
“অপরাধীদের রক্ষা করলে ভবিষ্যতে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া হবে।”
সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা ঘটে ২৭ জুন (শুক্রবার)। জুমার নামাজের পর সাদিরচর এলাকায় শতাধিক মুসল্লি শান্তিপূর্ণ মিছিল করে অভিযুক্ত মাদক ব্যবসায়ী রুবেলের বাড়ির সামনে উপস্থিত হন এবং তাকে মাদক ছাড়ার আহ্বান জানান।
রুবেল নিজেই জনসম্মুখে ঘোষণা দেন—
“আজকের পর থেকে আর কখনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকব না। আমি সুস্থ পথে ফিরে আসতে চাই।”
এই ঘোষণার পর এলাকাবাসী তাকে সাধুবাদ জানায় ও উৎসাহ দেয়।
গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া এই ঘটনাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন,
“এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, বরং একটি সামাজিক আন্দোলন।”
এই তিনটি ঘটনার প্রেক্ষিতে স্পষ্ট যে গাজিরচর ইউনিয়নে জনগণের মাদকবিরোধী চেতনা এখন জাগ্রত। তরুণ সমাজ থেকে শুরু করে প্রবীণ, সবাই এক কণ্ঠে বলছেন—
“সাদিরচর মাদকমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই চলবে।”
এলাকাবাসীর এমন ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি একটি সামাজিক বিপ্লবের সূচনা, যেখানে মানুষ নিজেরাই নেতৃত্ব নিচ্ছে নিজেদের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার।
বাজিতপুর নিউজ মতামত সেল
আপনার মতামত দিন: আপনি কি মনে করেন—এভাবেই জনতার উদ্যোগে সমাজ থেকে মাদক নির্মূল সম্ভব?
মতামত দিন: bajitpurnews.com/muktimat
আপনার মতামত লিখুন