রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

৪০ বছর পর ‘উইন্ডোজ ব্লু স্ক্রিনকে’ বিদায় জানাল মাইক্রোসফট

৪০ বছর পর ‘উইন্ডোজ ব্লু স্ক্রিনকে’ বিদায় জানাল মাইক্রোসফট
এই পরিবর্তনে রিস্টার্টে অপেক্ষার সময় দুই সেকেন্ডে নেমে আসবে। ছবি: মাইক্রোসফট

প্রায় ৪০ বছর ধরে প্রযুক্তিপ্রেমীদের আতঙ্ক হয়ে থাকা ‘ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ’ (BSOD) এবার ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে যাচ্ছে। বিশ্বের কোটি কোটি উইন্ডোজ ব্যবহারকারীর চিরচেনা এই ভয়াবহ নীল পর্দাটি—যা জরুরি মুহূর্তে কম্পিউটার থামিয়ে দিয়ে বলে "রিকভারি"—তাকে এবার বিদায় জানাচ্ছে মাইক্রোসফট।

ব্লু স্ক্রিনের জায়গা নিচ্ছে নতুন ‘ব্ল্যাক স্ক্রিন অফ ডেথ’। হ্যাঁ, এখন থেকে পিসি ক্র্যাশ করলে আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে একটি আরও ‘শান্ত’ কালো পর্দা। তবে আতঙ্ক কমবে কিনা, তা নিয়ে প্রযুক্তি মহলে চলছে আলোচনা।


কেন এই পরিবর্তন?

সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক-এর ত্রুটিপূর্ণ একটি আপডেট গত বছর বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের প্রযুক্তিগত বিপর্যয় ডেকে আনে।

  • এতে প্রায় ৮৫ লাখ উইন্ডোজ কম্পিউটার একযোগে ক্র্যাশ করে।

  • ক্ষতিগ্রস্ত হয় এয়ারলাইন্স, হাসপাতাল, জরুরি পরিষেবা, ব্যাংকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাত।

  • আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ পৌঁছায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে

এই ঘটনার পর মাইক্রোসফট প্রতিশ্রুতি দেয়, তাদের সিস্টেম রিকভারি আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং দ্রুততর করা হবে।


নতুন কী থাকছে?

মাইক্রোসফটের এন্টারপ্রাইজ ও অপারেটিং সিস্টেম সুরক্ষা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ওয়েস্টন জানিয়েছেন—

  • ‘কুইক মেশিন রিকভারি’ নামে একটি নতুন পদ্ধতি আনা হচ্ছে, যা বিশেষভাবে উপকারী হবে যেসব পিসি সহজে রিস্টার্ট হয় না তাদের জন্য।

  • নতুন রিকভারি সিস্টেম চালু হবে এই গ্রীষ্মের শেষে উইন্ডোজ ১১-এর ২৪H২ আপডেট থেকে।

  • এতে রিস্টার্টের জন্য অপেক্ষার গড় সময় কমে মাত্র দুই সেকেন্ডে নেমে আসবে।


আরও স্বচ্ছতা, আরও নিয়ন্ত্রণ

ডেভিড ওয়েস্টন আরও বলেন—

“আমরা চাই ব্যবহারকারীরা বুঝুক, কোন সমস্যাটা ঠিক কোথায় ঘটেছে—উইন্ডোজের নিজের মধ্যে, নাকি কোনো নির্দিষ্ট কম্পোনেন্টে। তাই আরও পরিষ্কার তথ্য থাকবে স্ক্রিনে, যেন দ্রুত সমাধানে যাওয়া যায়।”

উইন্ডোজের প্রবীণ ডেভেলপার রেমন্ড চেন এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, এই ব্লু স্ক্রিনটির জন্ম হয়েছিল ৯০ এর দশকের গোড়ায়। তখনকার কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ছিল ‘প্রযুক্তির আতঙ্ক’। এখন সেই আতঙ্ক বিদায় নিচ্ছে আরও আধুনিক এবং কম আতঙ্কজনক এক অভিজ্ঞতার জন্য।


শেষ কথা

ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ এক সময় প্রযুক্তির ব্যর্থতার প্রতীক ছিল—আজ সেটিই ইতিহাস। তার বদলে আসছে কালো স্ক্রিন, যার কাজ হবে ভয় দেখানো নয়, বরং সাহায্য করা। ৪০ বছরের একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে মাইক্রোসফট বলছে, ভবিষ্যতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল তারা।

কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—কালো হোক আর নীল হোক, স্ক্রিন আসলেই বন্ধ হবে তো? নাকি শুধু রঙটাই পাল্টাচ্ছে?

বিষয় : মাইক্রোসফট বিজ্ঞান

আপনার মতামত লিখুন

বাজিতপুর নিউজ

রোববার, ২৯ জুন ২০২৫


৪০ বছর পর ‘উইন্ডোজ ব্লু স্ক্রিনকে’ বিদায় জানাল মাইক্রোসফট

প্রকাশের তারিখ : ২৮ জুন ২০২৫

featured Image

প্রায় ৪০ বছর ধরে প্রযুক্তিপ্রেমীদের আতঙ্ক হয়ে থাকা ‘ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ’ (BSOD) এবার ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাতে যাচ্ছে। বিশ্বের কোটি কোটি উইন্ডোজ ব্যবহারকারীর চিরচেনা এই ভয়াবহ নীল পর্দাটি—যা জরুরি মুহূর্তে কম্পিউটার থামিয়ে দিয়ে বলে "রিকভারি"—তাকে এবার বিদায় জানাচ্ছে মাইক্রোসফট।

ব্লু স্ক্রিনের জায়গা নিচ্ছে নতুন ‘ব্ল্যাক স্ক্রিন অফ ডেথ’। হ্যাঁ, এখন থেকে পিসি ক্র্যাশ করলে আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে একটি আরও ‘শান্ত’ কালো পর্দা। তবে আতঙ্ক কমবে কিনা, তা নিয়ে প্রযুক্তি মহলে চলছে আলোচনা।


কেন এই পরিবর্তন?

সাইবার নিরাপত্তা কোম্পানি ক্রাউডস্ট্রাইক-এর ত্রুটিপূর্ণ একটি আপডেট গত বছর বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের প্রযুক্তিগত বিপর্যয় ডেকে আনে।

  • এতে প্রায় ৮৫ লাখ উইন্ডোজ কম্পিউটার একযোগে ক্র্যাশ করে।

  • ক্ষতিগ্রস্ত হয় এয়ারলাইন্স, হাসপাতাল, জরুরি পরিষেবা, ব্যাংকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাত।

  • আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ পৌঁছায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারে

এই ঘটনার পর মাইক্রোসফট প্রতিশ্রুতি দেয়, তাদের সিস্টেম রিকভারি আরও সহজ, স্বচ্ছ এবং দ্রুততর করা হবে।


নতুন কী থাকছে?

মাইক্রোসফটের এন্টারপ্রাইজ ও অপারেটিং সিস্টেম সুরক্ষা বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেভিড ওয়েস্টন জানিয়েছেন—

  • ‘কুইক মেশিন রিকভারি’ নামে একটি নতুন পদ্ধতি আনা হচ্ছে, যা বিশেষভাবে উপকারী হবে যেসব পিসি সহজে রিস্টার্ট হয় না তাদের জন্য।

  • নতুন রিকভারি সিস্টেম চালু হবে এই গ্রীষ্মের শেষে উইন্ডোজ ১১-এর ২৪H২ আপডেট থেকে।

  • এতে রিস্টার্টের জন্য অপেক্ষার গড় সময় কমে মাত্র দুই সেকেন্ডে নেমে আসবে।


আরও স্বচ্ছতা, আরও নিয়ন্ত্রণ

ডেভিড ওয়েস্টন আরও বলেন—

“আমরা চাই ব্যবহারকারীরা বুঝুক, কোন সমস্যাটা ঠিক কোথায় ঘটেছে—উইন্ডোজের নিজের মধ্যে, নাকি কোনো নির্দিষ্ট কম্পোনেন্টে। তাই আরও পরিষ্কার তথ্য থাকবে স্ক্রিনে, যেন দ্রুত সমাধানে যাওয়া যায়।”

উইন্ডোজের প্রবীণ ডেভেলপার রেমন্ড চেন এক ব্লগ পোস্টে জানিয়েছেন, এই ব্লু স্ক্রিনটির জন্ম হয়েছিল ৯০ এর দশকের গোড়ায়। তখনকার কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য এটি ছিল ‘প্রযুক্তির আতঙ্ক’। এখন সেই আতঙ্ক বিদায় নিচ্ছে আরও আধুনিক এবং কম আতঙ্কজনক এক অভিজ্ঞতার জন্য।


শেষ কথা

ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ এক সময় প্রযুক্তির ব্যর্থতার প্রতীক ছিল—আজ সেটিই ইতিহাস। তার বদলে আসছে কালো স্ক্রিন, যার কাজ হবে ভয় দেখানো নয়, বরং সাহায্য করা। ৪০ বছরের একটা অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে মাইক্রোসফট বলছে, ভবিষ্যতের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল তারা।

কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়—কালো হোক আর নীল হোক, স্ক্রিন আসলেই বন্ধ হবে তো? নাকি শুধু রঙটাই পাল্টাচ্ছে?


বাজিতপুর নিউজ

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ মোশিউর রহমান আতিক | নির্বাহী সম্পাদক: মোহাম্মদ খলিলুর রহমান
কপিরাইট © ২০২৫ বাজিতপুর নিউজ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত