
“জুলাইয়ের অর্জন কারও একার নয়, এটা ১৮ কোটি মানুষের রক্ত, ঘাম, অশ্রু আর আত্মত্যাগের ফসল”— এমন দৃঢ় উচ্চারণে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ডক্টর’স মিলনায়তনে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শাখার ড্যাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি ছিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
শরীফুল আলম বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকে ইতিহাস লিখতে গিয়ে অনেকেই কুক্ষিগত করে মাত্র এক মাস পাঁচ দিনের একটি আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে এ আন্দোলনের অর্জনটুকু সম্পূর্ণরূপে তারা পকেটস্থ করতে চায়। কিন্তু এ অর্জন এ দেশের আপামর জনসাধারণের, ১৮ কোটি মানুষের। জুলাইয়ের এই অর্জন কাউকে কুক্ষিগত করতে দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এই অর্জনটাকে কোনো গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ১৭ বছরে যারা শ্রম দিয়েছেন, কষ্ট করেছেন, জীবন দিয়েছেন এই আন্দোলনের পিছনে— আমরা সবাইকে স্যালুট জানাই, শ্রদ্ধা করি। সবাই মিলে এই দেশটাকে একটি সুন্দর জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।”
আলোচনায় তিনি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বলেন, “অনেকে বলে বিএনপি নির্বাচনের জন্য পাগল হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা নির্বাচনের জন্য পাগল হইনি। আমরা মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য রক্ত ও জীবন দিয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না— কে আসবে, এটা বড় কথা নয়। আমরা মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।”
তার ভাষায়, “অনেকে হয়তো নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়নি। কিন্তু তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নেমেছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি তরুণ ভোটার এখনো জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পারেনি। এই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই বিএনপি কথা বলছে।”
তিনি বলেন, “বিএনপি যদি নির্বাচনের জন্য পাগল হতো, তাহলে অনেক আগেই সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা করিনি। আমাদের আদর্শ ছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের— মানুষের ভালোবাসা, মানুষের অধিকার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। সেই আদর্শেই আমরা জীবন দিয়েছি, সংগ্রাম করেছি। ক্ষমতার জন্য নয়। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে তারেক রহমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন।”
শরীফুল আলম বলেন, “আমরা আজো গন্তব্যে পৌঁছাইনি। কিন্তু আমরা একসঙ্গে সবাই মিলে কাজ করেছি। ১৭ বছরের আন্দোলনের ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। আমরা ইলিয়াস আলী-চৌধুরী আলমসহ অনেক নেতাকে হারিয়েছি। আজো তাদের সন্তানরা অপেক্ষায় আছে— হয়তো বিজয়ের পর তারা ফিরে আসবে। আজো তারা নিখোঁজ।”
হেফাজতের আন্দোলন থেকে শুরু করে বিডিআর হত্যাকাণ্ড— সবই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে শরীফুল আলম বলেন, “প্রতিটি শহীদ, প্রতিটি রক্তবিন্দু আমাদের বিজয়ের প্রেরণা যুগিয়েছে।”
ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. আমিরুজ্জামান, ডা. আতিকুল সারোয়ার, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, পিপি জালাল উদ্দিন, পৌর বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আশফাক, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. একরাম আহসান জুয়েল, ড্যাব নেতা ডা. এস.কে.এম. নাজমুল আলম, ডা. মীর সাদ সৈকত, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ এবং সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মো. মারুফ মিয়া।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক, মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
প্রকাশের তারিখ : ০৩ জুলাই ২০২৫
“জুলাইয়ের অর্জন কারও একার নয়, এটা ১৮ কোটি মানুষের রক্ত, ঘাম, অশ্রু আর আত্মত্যাগের ফসল”— এমন দৃঢ় উচ্চারণে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ডক্টর’স মিলনায়তনে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল শাখার ড্যাব আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানটি ছিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শোক ও বিজয়ের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
শরীফুল আলম বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকে ইতিহাস লিখতে গিয়ে অনেকেই কুক্ষিগত করে মাত্র এক মাস পাঁচ দিনের একটি আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে এ আন্দোলনের অর্জনটুকু সম্পূর্ণরূপে তারা পকেটস্থ করতে চায়। কিন্তু এ অর্জন এ দেশের আপামর জনসাধারণের, ১৮ কোটি মানুষের। জুলাইয়ের এই অর্জন কাউকে কুক্ষিগত করতে দেওয়া হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা এই অর্জনটাকে কোনো গোষ্ঠী বা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ১৭ বছরে যারা শ্রম দিয়েছেন, কষ্ট করেছেন, জীবন দিয়েছেন এই আন্দোলনের পিছনে— আমরা সবাইকে স্যালুট জানাই, শ্রদ্ধা করি। সবাই মিলে এই দেশটাকে একটি সুন্দর জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।”
আলোচনায় তিনি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে বলেন, “অনেকে বলে বিএনপি নির্বাচনের জন্য পাগল হয়ে গেছে। কিন্তু আমরা নির্বাচনের জন্য পাগল হইনি। আমরা মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য রক্ত ও জীবন দিয়েছি। বিএনপি ক্ষমতায় আসবে না— কে আসবে, এটা বড় কথা নয়। আমরা মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।”
তার ভাষায়, “অনেকে হয়তো নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়নি। কিন্তু তা নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে নেমেছে। প্রায় সাড়ে তিন কোটি তরুণ ভোটার এখনো জীবনে প্রথমবারের মতো ভোট দিতে পারেনি। এই অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই বিএনপি কথা বলছে।”
তিনি বলেন, “বিএনপি যদি নির্বাচনের জন্য পাগল হতো, তাহলে অনেক আগেই সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা করিনি। আমাদের আদর্শ ছিল শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের— মানুষের ভালোবাসা, মানুষের অধিকার এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। সেই আদর্শেই আমরা জীবন দিয়েছি, সংগ্রাম করেছি। ক্ষমতার জন্য নয়। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে তারেক রহমান নেতৃত্ব দিয়ে জাতিকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছেন।”
শরীফুল আলম বলেন, “আমরা আজো গন্তব্যে পৌঁছাইনি। কিন্তু আমরা একসঙ্গে সবাই মিলে কাজ করেছি। ১৭ বছরের আন্দোলনের ইতিহাসকে কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। আমরা ইলিয়াস আলী-চৌধুরী আলমসহ অনেক নেতাকে হারিয়েছি। আজো তাদের সন্তানরা অপেক্ষায় আছে— হয়তো বিজয়ের পর তারা ফিরে আসবে। আজো তারা নিখোঁজ।”
হেফাজতের আন্দোলন থেকে শুরু করে বিডিআর হত্যাকাণ্ড— সবই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে উল্লেখ করে শরীফুল আলম বলেন, “প্রতিটি শহীদ, প্রতিটি রক্তবিন্দু আমাদের বিজয়ের প্রেরণা যুগিয়েছে।”
ড্যাবের আহ্বায়ক ডা. মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. আমিরুজ্জামান, ডা. আতিকুল সারোয়ার, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, পিপি জালাল উদ্দিন, পৌর বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম আশফাক, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. একরাম আহসান জুয়েল, ড্যাব নেতা ডা. এস.কে.এম. নাজমুল আলম, ডা. মীর সাদ সৈকত, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ এবং সাবেক ছাত্রদল সভাপতি মো. মারুফ মিয়া।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক, মেডিকেল শিক্ষার্থী এবং বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
আপনার মতামত লিখুন