বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

বাজিতপুরে কৃষক নিবু মিয়া হত্যা: পিবিআই বা সিআইডির তদন্ত দাবি পরিবারের

বাজিতপুরে কৃষক নিবু মিয়া হত্যা: পিবিআই বা সিআইডির তদন্ত দাবি পরিবারের
কৃষক নিবু মিয়ার হত্যাকারীদের শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহতের স্বজনরা। ছবি: বাজিতপুর নিউজ

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে নির্মমভাবে খুন হওয়া কৃষক নিবু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। একইসঙ্গে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অথবা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)-এর নিকট হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রবিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের একটি হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত নিবু মিয়ার বড় ছেলে ও মামলার বাদী আব্দুর রহমান হৃদয়

তিনি অভিযোগ করেন, “গত ১৯ অক্টোবর পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। অথচ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফিলতির কারণে এখনও প্রকৃত খুনিরা গ্রেপ্তার হয়নি। উপরন্তু, ওই কর্মকর্তা আমাদের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং নানা প্রলোভন দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেছেন। এমনকি চার্জশিট দেওয়ার নামেও টাকা নেওয়া হয়েছে।” হৃদয় জানান, ইতোমধ্যে ওই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হৃদয় আরও অভিযোগ করেন, “আমার ছোট ভাই সোহেল মিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে নির্যাতনের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না গিয়ে বাজারে বসে আসামিপক্ষের সঙ্গে চা খেয়ে তদন্ত করছেন। এতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহতের ছোট ছেলে সোহেল মিয়া বলেন, “আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করেছে। আমি বাবার মরদেহ নিজে কাঁধে করে কবর দিয়েছি। একজন সন্তানের পক্ষে তার বাবাকে খুন করা কীভাবে সম্ভব?”

তিনি নিজ ওপর চালানো নির্যাতনের বিচার দাবি করে বলেন, “আমাকে মাদকাসক্ত হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ আমি কোনোদিন অপরাধে জড়াইনি। প্রকৃত খুনিদের বিচারের মুখোমুখি না করে আমাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে নিহত নিবু মিয়ার স্ত্রী আলেহা খাতুন, পুত্রবধূ সুবর্ণা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক নিবু মিয়া ওষুধ কিনতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন দুপুরে পার্শ্ববর্তী তেলিবাড়ি এলাকার একটি ধানখেত থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর নিহতের ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ নিহতের ছেলে সোহেল মিয়াসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

পরিবারের দাবি, মামলাটি যেন প্রকৃত তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়। স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের ঘটনা তদন্তে স্বচ্ছতা না থাকলে সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে।

বিষয় : বাজিতপুর খুন হত্যা

আপনার মতামত লিখুন

বাজিতপুর নিউজ

বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫


বাজিতপুরে কৃষক নিবু মিয়া হত্যা: পিবিআই বা সিআইডির তদন্ত দাবি পরিবারের

প্রকাশের তারিখ : ০৬ জুলাই ২০২৫

featured Image

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে নির্মমভাবে খুন হওয়া কৃষক নিবু মিয়া হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং প্রকৃত হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহতের পরিবার। একইসঙ্গে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) অথবা ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)-এর নিকট হস্তান্তরের আহ্বান জানানো হয়েছে।

রবিবার (৬ জুলাই) বেলা ১১টায় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের একটি হলরুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত নিবু মিয়ার বড় ছেলে ও মামলার বাদী আব্দুর রহমান হৃদয়

তিনি অভিযোগ করেন, “গত ১৯ অক্টোবর পূর্বপরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে হত্যা করা হয়। অথচ তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে গাফিলতির কারণে এখনও প্রকৃত খুনিরা গ্রেপ্তার হয়নি। উপরন্তু, ওই কর্মকর্তা আমাদের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং নানা প্রলোভন দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করেছেন। এমনকি চার্জশিট দেওয়ার নামেও টাকা নেওয়া হয়েছে।” হৃদয় জানান, ইতোমধ্যে ওই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে হৃদয় আরও অভিযোগ করেন, “আমার ছোট ভাই সোহেল মিয়াকে অন্যায়ভাবে আটক করে নির্যাতনের মাধ্যমে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে। বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না গিয়ে বাজারে বসে আসামিপক্ষের সঙ্গে চা খেয়ে তদন্ত করছেন। এতে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা ক্রমেই ক্ষীণ হয়ে আসছে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নিহতের ছোট ছেলে সোহেল মিয়া বলেন, “আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টা করেছে। আমি বাবার মরদেহ নিজে কাঁধে করে কবর দিয়েছি। একজন সন্তানের পক্ষে তার বাবাকে খুন করা কীভাবে সম্ভব?”

তিনি নিজ ওপর চালানো নির্যাতনের বিচার দাবি করে বলেন, “আমাকে মাদকাসক্ত হিসেবে প্রমাণের চেষ্টা করা হয়েছে, অথচ আমি কোনোদিন অপরাধে জড়াইনি। প্রকৃত খুনিদের বিচারের মুখোমুখি না করে আমাকে বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে নিহত নিবু মিয়ার স্ত্রী আলেহা খাতুন, পুত্রবধূ সুবর্ণা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাজিতপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কৃষক নিবু মিয়া ওষুধ কিনতে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন দুপুরে পার্শ্ববর্তী তেলিবাড়ি এলাকার একটি ধানখেত থেকে তার গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর নিহতের ছেলে আব্দুর রহমান হৃদয় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ নিহতের ছেলে সোহেল মিয়াসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।

পরিবারের দাবি, মামলাটি যেন প্রকৃত তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ তদন্ত ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়। স্থানীয়দের মতে, এ ধরনের ঘটনা তদন্তে স্বচ্ছতা না থাকলে সমাজে বিচারহীনতার সংস্কৃতি আরও গভীর হবে।


বাজিতপুর নিউজ

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ মোশিউর রহমান আতিক | নির্বাহী সম্পাদক: মোহাম্মদ খলিলুর রহমান
কপিরাইট © ২০২৫ বাজিতপুর নিউজ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত