বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

হযরত শাহজালাল বাজারে অর্ধশতবর্ষী তিনটি রেন্টি গাছ

হযরত শাহজালাল বাজারে অর্ধশতবর্ষী তিনটি রেন্টি গাছ
হযরত শাহজালাল বাজারে ৫২ বছর ধরে দাঁড়িয়ে থাকা রেন্টি গাছগুলো। ছবিঃ বাজিতপুর নিউজ

আজও হযরত শাহজালাল বাজারের বুক জুড়ে ছায়া দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি পুরনো রেন্টি গাছ—যাদের বয়স ৫২ বছর। পেছনে ফিরে তাকালে এই গাছগুলো শুধু প্রকৃতির অংশ নয়, বরং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের এক নিঃশব্দ ইতিহাস বহন করে চলেছে।

১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নাত অধ্যায় শেষে যখন পুরো দেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, তখনই প্রতিষ্ঠিত হয় গাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদ। আর তার ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে, সেই নবপ্রতিষ্ঠিত পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান হযরত শাহজালাল বাজারে রোপণ করেন এই তিনটি রেন্টি গাছ।

তখনকার দিনে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো ছিল একধরনের দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। সেই সময় দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশবান্ধব চিন্তায় অভ্যস্ত না হলেও হামিদুর রহমান গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন একটি প্রাকৃতিক আশীর্বাদ।

আজ পঞ্চাশ বছর পর, বাজারে আসা প্রতিটি মানুষ এই গাছগুলোর নিচে কিছুটা প্রশান্তি খোঁজে। গরমের দিনে ব্যবসায়ী থেকে পথচারী—সবাই একটুখানি ছায়ার আশায় দাঁড়ান গাছগুলোর নিচে। ছোট ছোট শিশুরা খেলে বেড়ায় গাছের গোড়ায়। অনেকে বলেন, “এই গাছগুলোর নিচেই বাজারের প্রাণ।”

ছবিঃ আরো একটি গাছ।


এই গাছগুলো শুধু প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রতীক নয়, বরং একটি সময়, একটি সময়ের নেতা, এবং সেই সময়ের উদ্যোগের জীবন্ত সাক্ষ্য। আজ যখন উন্নয়ন আর আধুনিকতার দোহাইয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়, তখন হযরত শাহজালাল বাজারের এই তিনটি রেন্টি গাছ দাঁড়িয়ে আছে এক শক্ত বার্তা নিয়ে—প্রকৃতি ও ইতিহাস দুটোকেই রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

এই প্রসঙ্গে গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,

“এই রেন্টি গাছগুলো আমাদের ইউনিয়নের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতীক। আমরা চাই এই গাছগুলো সংরক্ষণে ইউনিয়ন পরিষদ এবং স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।”

স্থানীয়রা চান এই গাছগুলো যেন যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয় এবং এর পাশে একটি স্মারক ফলক বসানো হয় যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানে এই তিনটি রেন্টি গাছ কেবল গাছ নয়—এটি একটি ইউনিয়নের আত্মপরিচয় ও স্বাধীনতা-পরবর্তী স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন।

বিষয় : বাজিতপুর কিশোরগঞ্জ হযরত শাহজালাল বাজার

আপনার মতামত লিখুন

বাজিতপুর নিউজ

বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫


হযরত শাহজালাল বাজারে অর্ধশতবর্ষী তিনটি রেন্টি গাছ

প্রকাশের তারিখ : ০৭ জুলাই ২০২৫

featured Image

আজও হযরত শাহজালাল বাজারের বুক জুড়ে ছায়া দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তিনটি পুরনো রেন্টি গাছ—যাদের বয়স ৫২ বছর। পেছনে ফিরে তাকালে এই গাছগুলো শুধু প্রকৃতির অংশ নয়, বরং স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের এক নিঃশব্দ ইতিহাস বহন করে চলেছে।

১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের রক্তস্নাত অধ্যায় শেষে যখন পুরো দেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে, তখনই প্রতিষ্ঠিত হয় গাজিরচর ইউনিয়ন পরিষদ। আর তার ঠিক পরের বছর, অর্থাৎ ১৯৭৪ সালে, সেই নবপ্রতিষ্ঠিত পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান হযরত শাহজালাল বাজারে রোপণ করেন এই তিনটি রেন্টি গাছ।

তখনকার দিনে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানো ছিল একধরনের দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতিচ্ছবি। সেই সময় দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রাতিষ্ঠানিক পরিবেশবান্ধব চিন্তায় অভ্যস্ত না হলেও হামিদুর রহমান গাছ লাগিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রেখে গেছেন একটি প্রাকৃতিক আশীর্বাদ।

আজ পঞ্চাশ বছর পর, বাজারে আসা প্রতিটি মানুষ এই গাছগুলোর নিচে কিছুটা প্রশান্তি খোঁজে। গরমের দিনে ব্যবসায়ী থেকে পথচারী—সবাই একটুখানি ছায়ার আশায় দাঁড়ান গাছগুলোর নিচে। ছোট ছোট শিশুরা খেলে বেড়ায় গাছের গোড়ায়। অনেকে বলেন, “এই গাছগুলোর নিচেই বাজারের প্রাণ।”

ছবিঃ আরো একটি গাছ।


এই গাছগুলো শুধু প্রকৃতি সংরক্ষণের প্রতীক নয়, বরং একটি সময়, একটি সময়ের নেতা, এবং সেই সময়ের উদ্যোগের জীবন্ত সাক্ষ্য। আজ যখন উন্নয়ন আর আধুনিকতার দোহাইয়ে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়, তখন হযরত শাহজালাল বাজারের এই তিনটি রেন্টি গাছ দাঁড়িয়ে আছে এক শক্ত বার্তা নিয়ে—প্রকৃতি ও ইতিহাস দুটোকেই রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

এই প্রসঙ্গে গাজিরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন,

“এই রেন্টি গাছগুলো আমাদের ইউনিয়নের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রতীক। আমরা চাই এই গাছগুলো সংরক্ষণে ইউনিয়ন পরিষদ এবং স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।”

স্থানীয়রা চান এই গাছগুলো যেন যথাযথভাবে সংরক্ষিত হয় এবং এর পাশে একটি স্মারক ফলক বসানো হয় যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানে এই তিনটি রেন্টি গাছ কেবল গাছ নয়—এটি একটি ইউনিয়নের আত্মপরিচয় ও স্বাধীনতা-পরবর্তী স্বপ্নের বাস্তব প্রতিফলন।


বাজিতপুর নিউজ

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ মোশিউর রহমান আতিক | নির্বাহী সম্পাদক: মোহাম্মদ খলিলুর রহমান
কপিরাইট © ২০২৫ বাজিতপুর নিউজ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত