সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে স্বৈরাচার-গণহত্যাকারী, থাকছে রাতের ভোটের কথাও

পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে স্বৈরাচার-গণহত্যাকারী, থাকছে রাতের ভোটের কথাও

গণঅভ্যুত্থানের পর দেশত্যাগ করলেও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ে থাকছে শেখ হাসিনার নাম। তবে তার আগে যুক্ত হচ্ছে ‘স্বৈরাচার-গণহত্যাকারী’ উপাধি। একই সঙ্গে পাঠ্যক্রমে যোগ হচ্ছে রাতের ভোট, ডামি নির্বাচনসহ আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন বিতর্কিত নির্বাচনের ইতিহাস।

২০২১ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে পুরো ভাষণ অষ্টম শ্রেণির সাহিত্য-কণিকা বইয়ে ছয় পৃষ্ঠাজুড়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শিক্ষাবিদদের একাংশের মত, একই ভাষণ একাধিক বইয়ে যুক্ত হওয়ায় বিষয়টি হয়েছে অতিরঞ্জিত। তাদের মতে, এক বা দুটি বইয়ে রাখা গেলেও বাকিগুলো থেকে বাদ দেয়া উচিত। তবে এ বিষয়ে এখনও একমত হতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিমার্জন কমিটি।

এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরী জানিয়েছেন, বইয়ের বিষয়বস্তু পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। সব প্রস্তাবই কমিটির আলোচনার মধ্য দিয়ে যাবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে কয়েকটি কমিটির সম্মতি নিতে হবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেছেন, পাঠ্যবইয়ে রাজনৈতিক ইতিহাসকে নিরাসক্ত ও শোভনভাবে উপস্থাপন করা উচিত। তার ভাষায়, “কোনও কিছুই বাদ দেয়া যাবে না বা অযথা বাড়াবাড়িও করা যাবে না। আগে যদি অতিরঞ্জন হয়ে থাকে, সেটাকে সাধারণ মাত্রায় আনতে পরিমার্জন প্রয়োজন।”

সূত্র জানায়, নতুন বইয়ে আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংযোজন করা হচ্ছে। একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ‘পৌরনীতি ও সুশাসন’ বইয়ে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের তথ্য যোগ হবে। শেখ হাসিনার নামের আগে ‘স্বৈরাচার’ ও ‘গণহত্যাকারী’ শব্দ যুক্ত করা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, “স্বৈরাচার শব্দটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে আগেও ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এটি নতুন বা ব্যতিক্রম কিছু নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আগে রাজনৈতিক সরকারের সময় ইতিহাস নিরপেক্ষভাবে লেখা হতো না। এখন অরাজনৈতিক সরকার থাকায় সেই প্রভাব অনেক কম। আমি বলব, পুরোপুরি সন্তোষজনক না হলেও এবার কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।”

নতুন শিক্ষাক্রম স্থগিত করে অন্তর্বর্তী সরকার ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে বইগুলো পুনর্গঠন করছে। ২০২৬ সালের সংস্করণের জন্যও সেই ধারাবাহিকতায় বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

বিষয় : জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ড

আপনার মতামত লিখুন

বাজিতপুর নিউজ

সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫


পাঠ্যবইয়ে শেখ হাসিনার নামের আগে স্বৈরাচার-গণহত্যাকারী, থাকছে রাতের ভোটের কথাও

প্রকাশের তারিখ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫

featured Image

গণঅভ্যুত্থানের পর দেশত্যাগ করলেও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যবইয়ে থাকছে শেখ হাসিনার নাম। তবে তার আগে যুক্ত হচ্ছে ‘স্বৈরাচার-গণহত্যাকারী’ উপাধি। একই সঙ্গে পাঠ্যক্রমে যোগ হচ্ছে রাতের ভোট, ডামি নির্বাচনসহ আওয়ামী লীগ আমলের বিভিন্ন বিতর্কিত নির্বাচনের ইতিহাস।

২০২১ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ্যবইয়ে যুক্ত হয়। পরবর্তীতে পুরো ভাষণ অষ্টম শ্রেণির সাহিত্য-কণিকা বইয়ে ছয় পৃষ্ঠাজুড়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শিক্ষাবিদদের একাংশের মত, একই ভাষণ একাধিক বইয়ে যুক্ত হওয়ায় বিষয়টি হয়েছে অতিরঞ্জিত। তাদের মতে, এক বা দুটি বইয়ে রাখা গেলেও বাকিগুলো থেকে বাদ দেয়া উচিত। তবে এ বিষয়ে এখনও একমত হতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) পরিমার্জন কমিটি।

এনসিটিবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক রবিউল কবির চৌধুরী জানিয়েছেন, বইয়ের বিষয়বস্তু পর্যালোচনার জন্য একটি কমিটি কাজ করছে। সব প্রস্তাবই কমিটির আলোচনার মধ্য দিয়ে যাবে এবং চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে কয়েকটি কমিটির সম্মতি নিতে হবে।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ও জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেছেন, পাঠ্যবইয়ে রাজনৈতিক ইতিহাসকে নিরাসক্ত ও শোভনভাবে উপস্থাপন করা উচিত। তার ভাষায়, “কোনও কিছুই বাদ দেয়া যাবে না বা অযথা বাড়াবাড়িও করা যাবে না। আগে যদি অতিরঞ্জন হয়ে থাকে, সেটাকে সাধারণ মাত্রায় আনতে পরিমার্জন প্রয়োজন।”

সূত্র জানায়, নতুন বইয়ে আওয়ামী লীগ আমলের নির্বাচন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সংযোজন করা হচ্ছে। একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির ‘পৌরনীতি ও সুশাসন’ বইয়ে ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনের তথ্য যোগ হবে। শেখ হাসিনার নামের আগে ‘স্বৈরাচার’ ও ‘গণহত্যাকারী’ শব্দ যুক্ত করা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, “স্বৈরাচার শব্দটি আমাদের পাঠ্যবইয়ে আগেও ব্যবহৃত হয়েছে। তাই এটি নতুন বা ব্যতিক্রম কিছু নয়।”

তিনি আরও বলেন, “আগে রাজনৈতিক সরকারের সময় ইতিহাস নিরপেক্ষভাবে লেখা হতো না। এখন অরাজনৈতিক সরকার থাকায় সেই প্রভাব অনেক কম। আমি বলব, পুরোপুরি সন্তোষজনক না হলেও এবার কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।”

নতুন শিক্ষাক্রম স্থগিত করে অন্তর্বর্তী সরকার ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে বইগুলো পুনর্গঠন করছে। ২০২৬ সালের সংস্করণের জন্যও সেই ধারাবাহিকতায় বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে।


বাজিতপুর নিউজ

প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ মোশিউর রহমান আতিক | নির্বাহী সম্পাদক: মোহাম্মদ খলিলুর রহমান
কপিরাইট © ২০২৫ বাজিতপুর নিউজ । সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত