রোববার, ২৯ জুন ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

দুই বছর পর ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ

দীর্ঘ দুই বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। মূলত আন্তর্জাতিক তিনটি ঋণ সহায়তা সংস্থার অর্থ যোগান এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি এই অর্জনের মূল চালিকা শক্তি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে জানান, আইএমএফের কাছ থেকে ১৩৪ কোটি ডলার, এডিবি’র ৯০ কোটি এবং জাইকার অর্থ সহায়তা যুক্ত হয়ে মোট রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৫১ বিলিয়নে পৌঁছেছে। বিপিএম-৬ মানদণ্ড অনুযায়ী হিসাব করলেও এই রিজার্ভ ২৫ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়িয়ে গেছে।এছাড়াও রয়েছে ‘ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ’ নামে আরেকটি পরিমাপ পদ্ধতি, যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা না হলেও বাস্তবিকভাবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এই রিজার্ভ প্রায় ২০ বিলিয়নের কাছাকাছি অবস্থান করছে, যা দিয়ে প্রায় সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় নির্বিঘ্নে চালানো সম্ভব।বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বৈধ পথে প্রবাসী আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে, যা রিজার্ভে স্বস্তি ফিরিয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১০ মাস ধরে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেনি, যা রিজার্ভ বাড়ানোর পেছনে বড় অবদান রেখেছে। পাশাপাশি বাজেট সহায়তা, রাজস্ব খাত সংস্কার ও উন্নয়ন ঋণ হিসেবে আরও ৫০০ কোটির বেশি ডলার দেশে এসেছে।রিজার্ভ বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়ে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, রিজার্ভের ধসই একসময় মূল্যস্ফীতি, আমদানি সংকট এবং টাকার মান পতনের মতো সংকটের জন্ম দেয়।উল্লেখ্য, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। এরপর ব্যাপক অর্থপাচার, কোভিড-পরবর্তী আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতির কারণে তা ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকে। এই পটভূমিতে ২০২২ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশ সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, রিজার্ভ এখন বাড়তির দিকে থাকলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি ধরে রাখতে হলে রফতানি বৃদ্ধি, প্রবাসী আয় টেকসই রাখা এবং খরচের খাতগুলোতে সংস্কার অপরিহার্য। অন্যথায় সাময়িক স্বস্তির এই অবস্থা স্থায়ী হবে না।

দুই বছর পর ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ