দক্ষিণ সাদিরচরে গান-বাজনা ও আতশবাজির বিরুদ্ধে যুবসমাজের অনবদ্য উদ্যোগ
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার গাজিরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদিরচর গ্রামে সামাজিক পরিবেশ ও ধর্মীয় অনুশাসন রক্ষায় অভিনব এক পদক্ষেপ নিয়েছে স্থানীয় যুবসমাজ। এলাকায় বাড়তে থাকা অশালীন গান-বাজনা, উচ্চস্বরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার এবং আতশবাজির মতো অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে জুম্মার নামাজ শেষে মসজিদ কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদনপত্র হস্তান্তর করা হবে আগামী শুক্রবার।গ্রামের যুবকদের পক্ষে প্রস্তুত করা এ আবেদনে বলা হয়েছে—সম্প্রতি বিয়েসহ নানা অনুষ্ঠানে সাউন্ডবক্সে উচ্চ শব্দে গান বাজানো, আতশবাজি ফোটানো ও বিভিন্ন অশালীন কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে, যা গ্রামের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছে। এতে শিশু, বৃদ্ধ ও শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবন যাপন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি, নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত ও কবরস্থানের পবিত্রতা মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা।আবেদনপত্রে যুবসমাজের পক্ষ থেকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরা হয়, যেমন:
দক্ষিণ সাদিরচরে সাউন্ডবক্সে গান-বাজনা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ ঘোষণা,
সব সামাজিক অনুষ্ঠানে ইসলামী শালীনতা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলা,
আতশবাজি ও উচ্চ শব্দসৃষ্টিকারী যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি।
স্থানীয় যুবকদের ভাষ্যমতে, দক্ষিণ সাদিরচর শতভাগ মুসলিম অধ্যুষিত একটি দ্বীনপ্রাণ গ্রাম। এখানকার মানুষ ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী। তারা মনে করেন, এই সংস্কৃতি রক্ষা করতে হলে সবাইকে একযোগে দায়িত্ব নিতে হবে।আগামী শুক্রবার (১১ জুলাই) দক্ষিণ সাদিরচর বাইতুল মামুর জামে মসজিদে জুম্মার নামাজের পর এ আবেদন মসজিদের ইমাম ও খতিব এবং কমিটির নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।এ বিষয়ে স্থানীয় মসজিদ কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনার জন্য এ ধরনের ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করব ইনশাআল্লাহ।"গ্রামের একজন প্রবীণ মুরব্বি বলেন, "আজকের যুবকরাই যদি এমন উদ্যোগ নেয়, তাহলে আগামী প্রজন্মের জন্য আমরা একটি শান্তিপূর্ণ ও নৈতিক সমাজ রেখে যেতে পারব।"গ্রামবাসীর আশা, এই আবেদন শুধু আবেদনেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলে বাস্তব পরিবর্তনের দিকে এগিয়ে যাবে দক্ষিণ সাদিরচর।