হোয়াটসঅ্যাপে ‘মেসেজ সামারাইজ’ ফিচার চালু: এআই এবার পড়বে আপনার না-পড়া
সামাজিক যোগাযোগ জায়ান্ট মেটা এবার হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য নিয়ে এসেছে এক অভিনব সুবিধা—এআইচালিত মেসেজ সারাংশ বা ‘মেসেজ সামারাইজ’ ফিচার।এতে করে ব্যবহারকারীরা আর প্রতিটি না-পড়া মেসেজ আলাদাভাবে পড়ে সময় নষ্ট করতে হবে না। বরং ছোট ছোট পয়েন্ট আকারে মূল কথা জেনে নিতে পারবেন—মেসেজ খোলার আগেই।
কীভাবে কাজ করে ফিচারটি?মেটা জানায়, এই ফিচারে ব্যবহার করা হচ্ছে তাদের নিজস্ব ‘মেটা এআই’ এবং ‘প্রাইভেট প্রসেসিং টেকনোলজি’, যার মাধ্যমে:
ব্যবহারকারীর না-পড়া মেসেজগুলো সংক্ষেপে উপস্থাপন করা হয়
সংক্ষিপ্তসার তৈরি হলেও প্রাপকের প্রাইভেসি অক্ষুণ্ণ থাকে
যাদের সঙ্গে চ্যাট করছেন, তারা জানতেও পারবেন না আপনি এআইয়ের সাহায্য নিচ্ছেন
কার জন্য এই ফিচার?বর্তমানে এটি শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্রে ইংরেজি ভাষায় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য চালু হয়েছে। তবে মেটা জানিয়েছে,
"২০২৪ সালের শেষ নাগাদ অন্যান্য ভাষা ও দেশের ব্যবহারকারীদের জন্য ফিচারটি উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।"
পেছনের উদ্দেশ্য কী?মেটার মতে, “সবসময় সব মেসেজ পড়ার সময় বা মনোযোগ থাকে না। দ্রুত তথ্য জানার চাহিদাই এই ফিচার আনার মূল উদ্দেশ্য।”এই ফিচারটি মূলত মেটার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ যেখানে তারা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ—তিনটি প্ল্যাটফর্মেই চ্যাটবট ও এআই প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে চাইছে।
জাকারবার্গের ভাবনা: “এআই হতে পারে একাকী মানুষের বন্ধু”সম্প্রতি স্ট্রাইপ বার্ষিক সম্মেলনে মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গ বলেন—
“ভবিষ্যতে এমন একটি এআই দরকার যা মানুষের পছন্দ-অপছন্দ, স্বভাব বুঝবে। ঠিক যেমন সোশ্যাল মিডিয়ার ফিড আমাদের জন্য সাজানো হয়।”
তার মতে,
“এআই একদিন এমন ‘বন্ধু’ হয়ে উঠবে যারা মানসিকভাবে একাকী মানুষদের সঙ্গ দিতে পারবে। চিকিৎসকের কাছে যাওয়া না-জানা মানুষদের জন্য এটি হতে পারে এক নতুন সহচর।”
তবে সতর্কতা জরুরিবিভিন্ন গবেষক ও প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন—
এআই চ্যাটবট এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে
এর সঙ্গে ‘সম্পর্ক’ বা অতিরিক্ত নির্ভরতা তৈরি করলে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে
সামাজিক সংযোগের বিকল্প হিসেবে এআইকে দেখাটা একজন মানুষের বাস্তব জীবন দক্ষতার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে
শেষ কথা
হোয়াটসঅ্যাপের নতুন এআই ফিচার নিঃসন্দেহে সময় বাঁচাবে। তবে প্রযুক্তি যতই ‘স্মার্ট’ হোক, বন্ধুত্ব বা সম্পর্ক গড়ে তোলার জায়গায় এখনো মানুষই সেরা।
