বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
বাজিতপুর নিউজ

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, বহিষ্কারের দাবি

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে জুলাই আন্দোলনের সংগঠক জোট জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ)। দলটির দাবি, তিনি ‘বিপ্লব ও ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে অবমাননাকর বক্তব্য’ দিয়ে চলেছেন, যা "বিএনপির অতীত সংগ্রামী ভাবমূর্তির সঙ্গে সাংঘর্ষিক"।রোববার (৬ জুলাই) জেআরএ তাদের ফেসবুক পেজে এ সংক্রান্ত একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করে। এতে লেখা হয়: “ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো।” কার্ডের সাথে যুক্ত ছিল ফজলুর রহমানের একটি বক্তব্য— “চক্রান্তের কাছে জনগণ হেরে গেছে।”পোস্টের ক্যাপশনে জেআরএ লিখেছে, “বিএনপির স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের গৌরবময় ইতিহাস থাকলেও ফজলুর রহমানের মতো নেতাদের বক্তব্যে সেই ইতিহাস আজ কালিমালিপ্ত। জুলাই-বিরোধী বক্তব্য দিয়ে তিনি মূলত জনগণের বিজয়কে খাটো করেছেন। দল থেকে এদের বহিষ্কার করা জরুরি।”বিষয়টি নিয়ে আমার দেশ অনলাইন যোগাযোগ করলে জেআরএ’র আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ পোস্টের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “৫ আগস্টের বিজয়ের পর থেকেই ফজলুর রহমান ধারাবাহিকভাবে বিপ্লব ও বিপ্লবীদের হেয় করছেন। উনি বিএনপির ছায়ায় থেকে যা ইচ্ছা বলছেন। এটা আমরা আর মেনে নিচ্ছি না।” তিনি জানান, “বহুদিন ধরে আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলাম। ছাত্রদল, ছাত্রশিবিরসহ অন্যান্য জুলাই অংশীদারদের সঙ্গে পরামর্শ করেই আমরা তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি।” ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার অর্থ কী—এমন প্রশ্নে সালেহ বলেন, “তিনি আর আগের মতো মানুষের সম্মান পাবেন না। জনগণ তাকে সামাজিকভাবে প্রত্যাখ্যান করবে, ছাত্র-জনতা তাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে।”উল্লেখ্য, ফজলুর রহমান ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালের পর তিনি বিদ্রোহী ছাত্রলীগ গড়ে তোলেন। পরে কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ বিএনপিতে যোগ দিয়ে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদে আসীন হন।তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের স্বৈরাচার পতনের পর ফজলুর রহমান নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন, বিশেষ করে ছাত্র ও তরুণদের মধ্যে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি এখন দুই পথের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে—একদিকে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের ঢেউ, অন্যদিকে দলের পুরনো নেতৃত্বের ভাষা ও ভাবনার বিশৃঙ্খলা। ফজলুর রহমানের মতো নেতার অবস্থান নিয়ে দ্বিধা দেখা দিচ্ছে দলের ভেতরেও।এখন প্রশ্ন হচ্ছে—বিএনপি কি সত্যিই July-পরবর্তী বাস্তবতায় নিজেদের নতুনভাবে গড়বে, নাকি পুরনো নেতাদের দৃষ্টিভঙ্গির বলয়ে আটকে থাকবে?

বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, বহিষ্কারের দাবি